Featured Video Play Iconকলকাতা 

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের অবস্থান বিক্ষোভ আজ ১৪ দিনে পড়লো, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বাংলার জনরবকে দেওয়া আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের সাক্ষাৎকারে উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বিশেষ প্রতিনিধি : আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা তাদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে একটানা অবস্থান-বিক্ষোভ করে চলেছে। পার্কসার্কাস ক্যাম্পাসে এই অবস্থান-বিক্ষোভ আজ ১৪ দিনে পড়লো। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতরে এখন পানীয় জল পর্যন্ত নেই। এই অবস্থাতেও তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। গতকাল শনিবার বাংলার জনরব এর ইউটিউব চ্যানেলের লাইভ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আন্দোলনকারী ছাত্রদের প্রতিনিধিরা বলেন, আমরা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয় হলো রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। এমনকি একটি বৃহত্তর সংবাদমাধ্যম গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে মন্ত্রী গোলাম রব্বানী সাহেবকে ফোন করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে লাইন কেটে দেন ওই বলে সংবাদপত্রের খবর বেরিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা সৃষ্টি করছে এ নিয়ে রাজ্যজুড়ে প্রচার চলছে! এই অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রী পড়ুয়াদের দাবি অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করুক। তবে আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীরাও জানিয়ে দিয়েছেন তাদের দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

 

আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের দাবিগুলি নিম্নলিখিত :

Advertisement

(১) ২০২২ এর মধ্যে NAAC (শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান নির্ধারক সংস্থা )দ্বারা পরিদর্শন করানো জরুরী। তার জন্য প্রয়োজন ৪০ লক্ষ টাকা। সেই টাকা আলিয়াকে দেওয়া হচ্ছে না। কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ন্যাক করাতে সমস্যা হয়েছে বলে শুনিনি, যা আলিয়ার হচ্ছে।

(২)আলিয়ার জমি অন্য প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সংখ্যালঘু দপ্তর দিয়ে দিচ্ছে। সেই জমিতে আলিয়ার জন্য হস্টেল করার কথা ছিল। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দূরদূরান্ত থেকে আগত দরিদ্র ঘরের ছেলেমেয়েরা হস্টেল পাচ্ছে না।তাদের মেস ভাড়া করে থাকার মতো আর্থিক অবস্থা নেই। ছাত্র ছাত্রীরা সংকটে পড়ছে।

(৩) গবেষকরা যথাযথ স্কলারশিপ পান না, কম দেওয়া হয়। B. Tech এর স্টুডেন্টদের ও স্কলারশিপ কম দেওয়া হয় ।

(৪)ছাত্রীরা কন্যাশ্রী K3 ফর্ম ফিলাপ করতে পারেন না। কারণ লিস্টে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামই নেয়।

(৫) WBCS কোচিং দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।

(৬) ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী 293 জন শিক্ষক বা অধ্যাপক থাকার কথা। কিন্তু আছেন 180 জন। সমস্ত বিভাগে পর্যাপ্ত শিক্ষক পাওয়ার দাবী ছাত্রছাত্রীদের।

(৭)আলিয়ার দুটি অর্থবর্ষের টাকা তদন্তের অজুহাতে সংখ্যালঘু দপ্তর আটকে রেখেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় যে আন্দোলন চলছে সেই আন্দোলনের সব ছাত্র-ছাত্রীদের সায় নেই। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের দাবি এটা ঠিক নয়। তারা বলছেন,

“একটি অপপ্রচার চলছে যে, আলিয়ার একাংশ ছাত্র ছাত্রী আন্দোলনে যুক্ত। না তা নয়। নৈতিক ভাবে সমস্ত ছাত্রছাত্রী আন্দোলনে যুক্ত। বর্তমান প্রাক্তন সকলে বিভিন্ন ভাবে আন্দোলনকে সমর্থন জানাচ্ছেন। কোভিডের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফলাইন পঠনপাঠন বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীরা অনেকে দূরদূরান্ত থেকে আসতে পারছেন না। পালা করে অনেকে আসছেন। সোস্যাল মিডিয়ায় আন্দোলনকারীদের সমর্থনে পোস্টের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে, এটা তার প্রমাণ।” 

একইসঙ্গে আন্দোলনকারী ছাত্রছত্রীরা রাজ্যের প্রত্যেকটি সচেতন নাগরিকের কাছে দাবি করেছেন,”আপনারা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সম্পর্কে অবগত হন। ছাত্রছাত্রীদের অধিকার আদায়ের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিন। plz #SaveStudentsLife #standwithaliahuniversity #SaveAliahUniversity #আলিয়াবিশ্ববিদ্যালয়”

আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিশ্ববিদ্যালয় হলেও অনেক সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের ছাত্র শিক্ষক আছেন।আপনারা জানেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সমস্ত দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে।তাদেরকে টেনে তুলতে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে। নইলে সমাজের ডানা ভাঙা পাখির মতো অবস্থা দূর হবে না। শঙ্খ ঘোষের ভাষায় বলতে হয় ” কোথাও কিছুই যদি নেই, তবু তো কজন আছি বাকি। আয় আরো হাতে হাত রেখে, আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ” ।

গতকাল শনিবার এর বাংলার জনরবের ইউটিউব লাইভ অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে আন্দোলনকারী ছাত্ররা দাবি করেন তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন প্রত্যাহারের প্রশ্ন নেই। একই সঙ্গে তারা আরো দাবি করেন, সংখ্যালঘু দপ্তরের কোন আধিকারিক বা মন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইলে তার দরজা খোলা রয়েছে। কিন্তু সেই আলোচনা হবে প্রকাশ্যেই আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান-বিক্ষোভ মঞ্চে বসেই। একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি তাদের ডেকে পাঠান সেক্ষেত্রে এক প্রতিনিধি দল তার সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে পারেন। ছাত্র-ছাত্রীদের এই অনড় অবস্থান শেষ পর্যন্ত আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কোন দিকে মোড় নেয় সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজ্যের শিক্ষা মহল।

গতকালের ইউটিউব লাইভ অনুষ্ঠানের লিঙ্ক এই খবরের সঙ্গে জুড়ে দেয়া হলো আগ্রহীরা তা দেখতে পারেন। একইসঙ্গে আন্দোলনকারী ছাত্রদের বক্তব্য শুনে আন্দোলনের যৌক্তিকতা বিচার করতে পারেন যে কোন সচেতন নাগরিক। সেই জন্য আমাদের এই খবরের সঙ্গে গতকালের আলোচনার লিংক জুড়ে দেয়া হলো। ভালো লাগলে লাইক করবেন শেয়ার করবেন সাবস্ক্রাইব করে আমাদের পাশে দাঁড়াবেন।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ